প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ চিকিৎসার জুড়ি মেলা ভার। তখন ছিল না হোমিওপ্যাথি, এলোপ্যাথি। মানুষ গাছ-গাছড়া থেকেই ওযুধ তৈরি করে রোগ সারাতো। বর্তমানের প্রযুক্তিগত দুনিয়ায় বিভিন্ন রোগে বিভিন্ন ওষুধ বেরিয়েছে ঠিকই, কিন্তু, সেই আয়ুর্বেদিক ওযুধের গুণগত মান আজও সমান ভাবেই প্রাধান্য পাচ্ছে।

Health Benefits Of Giloy

গুলঞ্চ।

বহু প্রাচীন কাল থেকেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাবিদ্যায় ‘গিলয়’ নামে একটি ভেষজ ব্যবহৃত হয়। এই ভেষজের মধ্যেই আছে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান । ওষুধের নানান বৈশিষ্ট্যগুলি থাকার কারণে, গিলয় যুগে যুগে ভারতীয় চিকিৎসা শাস্ত্রে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রস, ক্যাপসুল বা গুঁড়ো যেকোনও ভাবেই এটি খাওয়া যেতে পারে। প্রাকৃতিকভাবে, এটি আমাদের স্বাস্থ্যের উপকারে লাগে বলে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রে এটি একটি জনপ্রিয় ঔষধি হিসেবে বিবেচিত। প্রায়ই সকলের রোগ নিরাময় করতে গিলয়কে ব্যবহার করা হয়। কারণ, খুব কম রোগই আছে যা এই ভেষজটি নিরাময় করতে পারে না। নীচে গিলয়ের রোগ নিরাময় সম্পর্কে আলোচনা করা হল –

১) শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গিলয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে যা রক্তকে বিশুদ্ধ করে, টক্সিনগুলি সরায় এবং রোগসৃষ্টিকারী ব্যাকটিরিয়ার ও ফ্রি-রেডিক্যালগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে। হৃদরোগ, মূত্রসংক্রান্ত নানান রোগ প্রতিরোধে এর যথেষ্ট কার্যকারিতা রয়েছে।

২) হজম শক্তি বৃদ্ধিতে গিলয় অন্যতম ভূমিকা পালন করে। পেটের নানান ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়।

৩) ক্রনিক জ্বর নিরাময়ের ক্ষেত্রেও গিলয় যথেষ্ট কার্যকর। প্রকৃতির অ্যান্টি-পাইরেটিক হওয়ায়, ঘন ঘন জ্বর হওয়া থেকে মুক্তি দেয় এটি। জ্বরের লক্ষণগুলি হ্রাস করতে পারে। এছাড়া, ডেঙ্গু, সোয়াইন ফ্লু ও ম্যালেরিয়ার মতো প্রাণঘাতী রোগ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে।

৪) ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে এটি যথেষ্ট কার্যকর। গিলয়ের রস পান করা অত্যন্ত উপকারী।

৫) হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করা হয় গিলয়। এটি সাধারণ ঠাণ্ডা লাগা ও কাশির জন্যও অত্যন্ত কার্যকরী।

৬) বিষণ্ণতা, স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমাতেও এটির ভূমিকা অপরিসীম। এটি মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

৭) ভেষজটির মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি থাকার কারণে এটি বেদনাদায়ক অসুস্থতা দূর করতে সাহায্য করে। আর্থ্রাইটিসের মতো প্রদাহজনিত রোগ নিরাময় করে। এতে অ্যান্টিআরথ্রিটিক বৈশিষ্ট্যও রয়েছে বলে মনে করা হয়। যা জয়েন্টের ব্যথা সারাতেও সহায়তা করে।

৮) গিলয়ের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য অকাল বয়স্কতা রোধে সহায়তা করে। ব্রণ, ডার্ক স্পট, রিঙ্কেলস এগুলি কমাতে সহায়তা করে এবং আপনার ত্বককে উজ্জ্বল রাখে। বয়স বৃদ্ধির প্রকোপ চেহারায় প্রকাশ পেতে দেয় না। বয়স বাড়ার সঙ্গে আমাদের দেহে যে ক্ষয় হয়, তা কিছুটা রোধ করে গিলয়।

৯) দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here