ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র তীরের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন পার্কে উদাল গাছটি দাঁড়িয়ে আছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সকালে হাঁটতে গিয়ে দেখি গাছ ফুলে ফুলে ভরে আছে, ঝুলে আছে পুষ্পমঞ্জরি। কয়েকটি পাতা আছে। বাকি সব পাতা ঝরে গেছে।

উদাল ফুল (ছবি উৎসঃ ইন্টারনেট)

উদাল ২০ মিটার বা ততধিক উঁচু পত্রমোচী মাথা ছড়ানো গাছ। ইংরেজিতে Hairy Sterculia বা Elephant rope tree নামে পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Sterculia villosa, এটি Sterculiaceae পরিবারের উদ্ভিদ। এদের বাকল সাদাটে রংয়ের। এদের পাতার বোঁটা লম্বা, ফলক বড় ও পাতা খাঁজকাটা, পাতার প্রশাখার আগায় পাতা ঘনবদ্ধ। এদের নিষ্পত্র শাখার লম্বা ও ঝুলন্ত ডাঁটায় অনেক ফুল হয়, ফুল পুংলিঙ্গ ও উভয়লিঙ্গ, ফুল ১.৫ সেমি চওড়া। ফুলগুলো হলুদ রংয়ের, ফুলের ভেতর বেগুনি। এদের ডাঁটায় একসঙ্গে কয়েকটি রোমশ বিদারি শুস্ক ফল গুচ্ছবদ্ধ, পাকলে গাঢ় লাল। এই গাছের বড় বড় কয়েকটি বীজ থাকে এবং বীজের রং কালো। বাংলাদেশসহ ক্রান্তীয় এশিয়ার প্রজাতি, বাকল থেকে আঁশ পাওয়া যায়। এদের বীজে চাষ করা হয়। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় জন্মে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-৪ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। উদাল গাছের কাঠ বাদামি রংয়ের হয়ে থাকে। কাঠ সাধারণত নরম ও হালকা হয়। এই গাছের কাঠ দিয়ে চা বাক্স বানানো হয়। এই গাছের বাকল থেকে এক ধরনের আঁশ পাওয়া যায়, সে আঁশ দিয়ে মোটা রশি তৈরি করা হয়। এর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। এর বাকলের শরবত খেলে শরীর ঠাণ্ডা রাখে। ফুলের বৃন্ত ছেঁচে পানির সঙ্গে চিনি দিয়ে শরবত করে খেলে প্রস্রাবের সমস্যা ও বাতের ব্যথা দূর হয়।

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here