মানুষ সুন্দরের পূজারী। আর
ফুল হলো সেই সৌন্দর্যের প্রতীক। ফুল আমাদের আত্মাকে পবিত্র করে। আপনার প্রিয়জনের মনকে আনন্দে ভরে দিতে পারে একগুচ্ছ ফুল। আজ এমনই একটি আশ্চর্য ফুল এবং ফুলের গাছ নিয়ে কথা বলবো।

Lantana camara, বা ল্যান্টানা বাংলাদেশের জনপ্রিয় বনফুল গুলোর মধ্যে একটি। এটি Verbenaceae Family’র অন্তর্ভুক্ত একটি উদ্ভিদ। গুল্ম জাতীয় ঝোপ আকৃতির গাছ। ল্যান্টানা গাছ সাধারণত  ৬ থেকে ৮ মিটার লম্বা হয়। এর সবচেয়ে মজার বৈশিষ্ট্যটি হচ্ছে, ফুলগুলো বিভিন্ন রংয়ের হয়ে থাকে। একই গাছে বিভিন্ন রঙবেরঙের ফুল। ভাবতেই ভালো লাগে।

এই ফুল আমাদের চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিকাল গার্ডেনের আশেপাশে প্রচুর পরিমাণে দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও হিমছড়ির পাহাড়ি এলাকায়ও এই ফুলের দেখা মিলে। আমরা গত ১৩ই মার্চ ২০২০ তারিখে হিমছড়িতে গিয়ে এই অপরুপ ফুলের সাথে সাক্ষাৎ করে এসেছিলাম। সেই থেকেই আমার এই উদ্ভিদ সম্পর্কে জানার এবং জানানোর কৌতুহল জন্মায়।

ল্যান্টানা একধরনের বনফুল হলেও এই ফুলের রঙের জুড়ি মেলাভার। নতুন ফুলের এক রঙ, আবার একটু পুরানো হলেই আরেক রঙ। একই থোকায় কয়েক রঙ। সাধারণত হলুদ, লাল, কমলা, বেগুনি, মেজেন্টা, পিংক ইত্যাদি রঙের ল্যান্টানা ফুল দেখা যায়। ফোটার পর ক্রমেই রঙ বদলায় আবার ঝোপ থেকে ঝোপে রঙের পার্থক্যও দেখা যায়। রঙবেরঙের ফুলে যখন হরেকরকম প্রজাপতি বসে থাকে,তারা যখন ফুলের সৌন্দর্যে আত্নহারা হয়ে উড়ে বেড়ায় তখন ল্যান্টেনার সৌন্দর্য বহুগুনে বেড়ে যায়।

ল্যান্টেনা শুধু দৃষ্টি নন্দনই নয়। এর অর্থনৈতিক গুরুত্বও রয়েছে। গাছের “উকুন” নামক কুখ্যাত এফিড পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য লান্টানাজাত উদ্ভিদ ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন মেডিসিন ও অর্নামেন্টাল তৈরিতে ল্যান্টেনা উদ্ভিদ ব্যবহৃত হয়। ল্যান্টানা ফুল গাছটির ভেষজ গুণও আছে; চর্মরোগ ও জ্বর নিরাময়ে এটি ব্যবহৃত হয়।

বাংলাদেশের মত জলবায়ুর দেশের বন-বাগানে এক সময় শীতকালে প্রচুরপরিমাণে এই Lantana camara উদ্ভিদটি দেখতে পাওয়া যেত। কিন্তু মানুষের খামখেয়ালি কর্মকান্ডের জন্য এটি দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের উচিত এরকম উপকারী,দৃষ্টিনন্দন একটি উদ্ভিদের প্রতি আরও যত্নবান হওয়া।

5 COMMENTS

  1. লেখক কে ধন্যবাদ চমতকার লেখনীর জন্য। এই বুনোফুলটি সত্যিই নজরকাড়া তাই লেখক এর প্রেমে পড়ে গেছেন বলে মনে হচ্ছে। তবে কিছু তথ্যের দিকে এক্টু নজর দেয়া উচিত বলে মনে হচ্ছে। এটি একটি ভিনদেশী উদ্ভিদ, আমাদের দেশে যা আগ্রাসী প্রজাতি হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে। তাই এটি হারিয়ে যাচ্ছে বলাটা বেমানান বলেই মনে করি। পরিশেষে লেখক কে আবারো ধন্যবাদ তার চমতকার লেখনীর জন্য।

  2. চমৎকার !
    ধন্যবাদ লেখক কে এমন সুন্দর একটি পোস্ট এর জন্য ।
    আপনার কাছ থেকে আরো লিখা চাই।
    আশা করি আপনি আমাদের আরো লেখা উপহার দিবেন ।

    • আশা করছি,এখান থেকে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবো। এত সুন্দর একটি ওয়েবসাইটে লিখতে পারলে আমারও খুব ভালো লাগবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here